ঈদগাঁও প্রতিনিধি :
কক্সবাজারের ঐতিহ্যবাহী ঈদগাঁও বাজারের প্রাণকেন্দ্রে কোটি টাকা মূল্যের সরকারি খাস জমিতে অবৈধ বহুতল স্থাপনা নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রশাসনের নাকের ডগায় এ অবৈধ নির্মাণকাজ চললেও রহস্যজনক কারণে কর্তৃপক্ষ কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেয়নি।
সরেজমিনে দেখা যায়, ঈদগাঁও বাজারের কবিরাজ সিটি সেন্টারের পশ্চিমে বাঁশু দে-র মালিকানাধীন জায়গায় চুক্তিভিত্তিকভাবে একটি ডেভেলপার কোম্পানি বহুতল ভবন নির্মাণ করছে। অভিযোগ রয়েছে, একই কোম্পানি ওই জমির দক্ষিণে সংলগ্ন প্রায় তিন শতক সরকারি খাস জমি অবৈধভাবে দখল করে সেখানে বাণিজ্যিক বহুতল ভবন নির্মাণ অব্যাহত রেখেছে।
এলাকাবাসীর দাবি, ‘জিনিয়াস এফজি’ নামে একটি ডেভেলপার প্রতিষ্ঠান স্থানীয় কিছু রাজনৈতিক নেতা ও প্রভাবশালী মহলকে ম্যানেজ করেই অবৈধ নির্মাণকাজ চালিয়ে যাচ্ছে। নিয়ম অনুযায়ী নির্মাণকাজে কোম্পানির নামসহ সাইনবোর্ড স্থাপন করার কথা থাকলেও, ঘটনাস্থলে কোনো সাইনবোর্ড দেখা যায়নি।
বাজারের ব্যবসায়ীরা জানান, প্রতিষ্ঠানটি ভূমি অফিসের কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারীকে প্রভাবিত করে ভূয়া কাগজপত্র তৈরি করেছে এবং দ্রুত ভবনটি শেষ করার চেষ্টা করছে।
সম্প্রতি ঈদগাঁও ইউনিয়নের ভূমি সহকারী কর্মকর্তা আব্দুল জব্বার খাস জমিতে সরকারি সাইনবোর্ড স্থাপন করতে গেলে বাধার মুখে পড়েন। পরে তিনি সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে নোটিশ জারি করেন।
এ বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যান ও স্থানীয় বাসিন্দা আলমগীর তাজ জনি বলেন, “আমি বিষয়টি খাস জমি জেনে ভূমি কর্মকর্তাকে উদ্ধার করার অনুরোধ করেছিলাম।”
ভূমি সহকারী কর্মকর্তা আব্দুল জব্বার বলেন, “সরকারি খাস জমিতে সাইনবোর্ড স্থাপন করতে গেলে কিছু ব্যক্তি বাধা দেয়। আমি তাদের নোটিশ দিয়েছি, এসিল্যান্ড স্যারের সঙ্গে কথা বলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
কক্সবাজার সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও ঈদগাঁওয়ের অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শারমিন সোলতানা জানান, “বিষয়টি আমরা জেনেছি, দ্রুত তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
অন্যদিকে, বাজারের সচেতন ব্যবসায়ীরা বলেন, “ছয় হাজারের বেশি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সমৃদ্ধ ঈদগাঁও বাজারে প্রতিবছর কোটি টাকার রাজস্ব আয় হলেও বাজারে এখনো একটি আধুনিক গণসৌচাগার পর্যন্ত নেই। অথচ সরকারি খাস জায়গা দখল করে ভবন তোলা হচ্ছে।”
তারা অভিযোগ করেন, আগেও ঈদগাঁও মাছ বাজার ও গরুর মাংস মার্কেটের খাস জমি অবৈধভাবে দখল করে বহুতল ভবন নির্মাণ করা হলেও প্রশাসন কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।
স্থানীয়রা অবিলম্বে সরকারি খাস জমি উদ্ধার করে সেখানে গণসৌচাগার ও জনকল্যাণমূলক স্থাপনা নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন।
